This blog is about Bangle Ghost, Horror, Funny and fantasy story.

This blog is about Bangle Ghost, Horror, Funny and fantasy story.

চোর

গ্রামে চোরের উপদ্রব বেড়েছে। এলাকার সবাই তাই পাহাড়া বসিয়েছে। রাস্তার মোড়ে উঠতি জোয়ান ছেলেদের ভাব সাব দেখলে মনে হচ্ছে, যুদ্ধ লেগেছে বুঝি। বাড়ির মহিলারাও কাস্তে শাবল মাথার কাছে রেখে ঘুমুতে গেছে। গ্রামের কুকুরগুলোও চোর ধরার জন্য পেট পুরে খেতে পেয়েছে।

রাত দুইটা।

চারদিকে নিস্তব্ধ। অপেক্ষায় থাকতে থাকতে গ্রামের যুবকেরা ঘুম ঘুম চোখে একে অন্যের দিকে চেয়ে আছে। কেউ ঘুমাচ্ছে তো তাকে টেনে উঠানো হচ্ছে। কিন্তু চোর না আসলে এভেবে আর কতক্ষন জেগে থাকা যায়। তাই একজন আরেক জনের উপরে মাথা রেখে ঘুমাতে লাগল।

হঠাৎ মৃধা বাড়ির এক বিয়ে বাড়ি থেকে ‘চোর’ ‘চোর’ বলে চিৎকার আসতে থাকল। প্রায় ঘুমিয়ে যাওয়া গ্রাম মূহুর্তের মধ্যেই জেগে উঠল। চারদিক থেকে নানা মানুষের ‘চোর’ ‘চোর’ বলে আওয়াজ আসতে থাকল। এমনকি মেয়ে আর ছোট পিচ্চিরাও চোর বলে চিৎকার করতে থাকল। বিভিন্ন দিক থেকে এত চিৎকারের মাঝে চিৎকারের মূল উৎসই হাড়িয়ে গেল। কোথায় চোর, আর কোথায় চোরকে ধরতে যাবে তাই কেউ বুঝলনা। মসজিদের মুয়াজ্জিন মাইকে ঘোষণা দিতে লাগল। কিন্তু কোন বাড়িতে চোর এসেছে তা সে বুঝতে পারেনি। এত চেচামেচির মধ্যে চোর কোথায় আছে তা বুঝতে না পেরে সবাই মসজিদের মুয়াজ্জিনের কাছে গেল। সেও বলতে পারেনা চোর কোথায়। তবে মসজিদে আসায় বিফল হতে হলনা। সকল মানুষ এক সাথে হওয়ায় আসল কথা বেড় হল। তারপর দল বেধে মৃধা বাড়ির বিয়ে বাড়ি ঘেরাও করল।

বাড়িতে নতুন জামাই এসেছে, কনের গায়ে অলংকার আছে কয়েক ভরী। সকলের সন্ধেহ ঘনীভূত হল। চোর ব্যাটা বড় দান মারতেই ঘরে ঢুকেছে।   বিয়ে বাড়ির সব ঘর তন্ন তন্ন করে খুঁজেও চোর পাওয়া গেলনা। শুধু বাকি রয়েছে কনের ঘর। কিন্তু কেউ সেই ঘরে যেতে নারাজ। এমন কি উঁকি দিতেও নারাজ। অবশেষে পাশের বাড়ির চাচী আম্মাকে এই দায়িত্ব দেয়া হল। তিনি উঁকি দিয়ে দেখে সাথে সাথেই চোখ ফিরিয়ে নিলেন। সবাই ভাবল, কী জানি দেখে ফেলেছে বুড়ি! কিন্তু বুড়ির মুখে কথা নাই। কয়েক সেকেন্ড পরে কথা বলল। তাদের মেয়ে নাকি খাটের নিচে মেঝেতে পড়ে আছে। সাথে সাথে কান্নার রোল পড়ে গেল। সবার সন্ধেহ জামাই বাবু চোর চোর বলে চিৎকার দেওয়াতে, চোর বুঝি দুই জনকেই মাইরা ফেলছে।

এই বাড়িতে মানুষ জন কম। তাই সাহস হয়নি চোরের মোকাবেলা করার। অগ্যতা দরজা ভাঙ্গা হল। বাতি জ্বালিয়ে সবাই দেখল জামাই বাবু নিশ্চিন্তে খাটের উপর ঘুমিয়ে আছে। আর কনে খাটের পাশে মেঝেতে ঘুমিয়ে আছে। ধাক্কা দিতেই দুইজনেই জেগে উঠল। বাইরে এত শব্দ হচ্ছে কিন্তু তাদের ঘুম ভাঙ্গেনাই কেন তাই বুঝতে পারলনা কেউ। কনের কানে তুলা দেওয়া। এটা আবিস্কার করা গেল, কনে কেন ঘুম থেকে জাগেনি। কিন্তু সে নিচে ঘুমিয়ে ছিল কেন, আর কেনই বা জামাই বাবু চোর ধরতে বাইরে বেরিয়ে আসেনি সেটা জিজ্ঞেস করতেই, জামাই বাবুর সাথে আসা দশ বছরের আক্কেল আলী চিঁচিঁ গলায় বলে উঠল, “আমাগো কিছলু মামার ঘুমের মধ্যি কথা বলার বদ অভ্যিস আছে, তাই সইতে না পাইড়া মামী জান নিচে গুমায় ছিল”।

অতঃপর সকলে বুঝল, সর্বপ্রথম চোর চোর বলে চিৎকার কে করেছিল। কিন্তু যুবক ছেলেরা যে লাঠিসোটা
নিয়ে, মেয়েরা যে কাস্তে শাবল নিয়ে চোর পেটাতে এসেছিল তার কি হবে?
Share:

কোন মন্তব্য নেই:

পৃষ্ঠাসমূহ

Popular

Translate

মোট পৃষ্ঠাদর্শন

Like Us