This blog is about Bangle Ghost, Horror, Funny and fantasy story.

This blog is about Bangle Ghost, Horror, Funny and fantasy story.

শুধু তোমায় খুঁজি





নিঃশব্দ থমথমে আঁধিয়ার চারিপাশ
বিনিদ্র শর্বরী।
 জলদহীন শূন্যে নিষ্পলক চোখ
 খোঁজে ফিরে কারে? 

 সে কি শূন্যে নাকি মহাশূন্যে? 
 সে কি আলো আঁধারের মাঝে লুকোচুরি খেলে! 
 নাকি অদৃশ্যেই তাঁর বাস? 
 ক্ষুদ্র, পাপী, পরাশ্রিকাতর মন
পাপাচারে কলুষিত কলেবর।
 তব এত আদরে যে রেখেছে আমায়। 
অফুরন্ত সমীরন, সুমিষ্ট বারি
বিহংগম কূজনে মুখরিত বাগান। 
 প্রবাহিনীর ঢেউ এ কূলে ও কূলে
 স্নান করিয়ে যায়। 
কী সুন্দর বসুন্ধরা! 
 তব সাজিয়েছে সে এই পাপিষ্ঠ ক্ষুদ্র মানবের তরে। 

 আজ মনের দ্বার খুলেছি। 
অন্তরচক্ষ খোঁজে তাঁরে,
মনবাড়ির এ ঘর ও ঘরে। 
 শুধুই খুঁজে ফিরে তাঁরে, 
যিনি মহান, মহাময়, মহাজ্ঞানী।

Share:

বাচ্চা ভূতের পড়ালেখা

ছেনু মিয়া তার সাত বছর বয়সী ছেলেটিকে এখনো গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়মিত করতে পারেনি। পুত্রের এমন অবস্থার জন্য সে একাই দায়ী তা কিন্তু নয়। তার স্ত্রীর উদাসীনতাই বরং ছেলেটিকে এমন হতে সাহায্য করেছে। বিদ্যালয়ে অন্যান্য ছেলেমেয়েরা যেখানে মাসে বিশ থেকে বাইশ দিন নিয়মিত উপস্থিত থাকে, সেখানে ছেনু মিয়ার ছেলে গেদুর উপস্থিতি মাত্র দুই থেকে তিন দিন। এ নিয়ে তার পরিবারের মাথা ব্যথা নেই। ছেলেটা স্কুলে ভর্তি হয়েছে সেটাই বা কম কিসে। বাড়িতে এমন আস্কারা পেয়ে ছেলেটি এই বয়সে বেয়াড়া হয়ে গেছে। সকাল বেলায় তার সম বয়সীদের হাতে যেখানে বই-খাতা থাকে সেখানে তার হাতে থাকে বক মারার বাটুল আর ঢিল। সে যে শুধু নিজেই এমন করে ক্ষান্ত থাকে তা কিন্তু না, তার সমবয়সী স্কুল পড়ুয়া বেশ কয়েক জনকেও সকাল বেলাতেই পটিয়ে ফেলে তার পাখী শিকার যাত্রায়। এ নিয়েই প্রায়ই ছেনু মিয়ার কাছে অভিযোগ আসলেও সে তাতে কখোনই কান দেয়না। বছরের প্রথম কয়েক মাস ধরে বিদ্যালয় ফাঁকি দিয়ে চলায় গেদুর অর্ধ বার্ষিকি পরীক্ষায় ফলাফল এল সেরকম। গণিত ও ইংরেজী মিলিয়ে সে পেল এক হালি রসগোল্লা। বাংলায় দুই চার অক্ষর লেখায় শিক্ষক দয়া করে দশ নম্বর দিলেন। আর অংকনে দেশের পতাকা আঁকতে গিয়ে কি যে একে ফেলল, তা অনুকরণ করে কেউ সেরকম কিছু আঁকতে পারবে কিনা সন্দেহ। তবুও তো খাতায় সে কিছু করে দেখিয়েছে। সেজন্য তাকে শিক্ষক দিয়েছেন পাঁচ নম্বর। স্কুলে এমন রেজাল্টের পর সারা গ্রামময় গেদুর নাম ছড়িয়ে পড়ল। ছেলেমেয়েদের মুখে মুখে গেদুর নাম। গেদু যেখানেই যায় সেখানেই তাকে সবাই খোঁচায়। এতে গেদু নিজেই বিপদে পড়ল। বাধ্য হয়ে বিচার দিল তার বাবা মাকে। ছেনু মিয়া এতগুলো বাচ্চার বিচার কিভাবে করবে তা বুঝে পেলনা। আবার ছেলের মায়ের রাগ দমাবে কিভবে তাও মাথায় আসছিলনা। ছেনু ভবে, মায়ের আদরের পুত্রকে এমন ভাবে অপমান করে তা কি করে মায়ের সইতে পারে? পরদিন বিকেল বেলাতেই স্কুলের এক শিক্ষককে গেদুর প্রাইভেট টিউটর হিসেবে নিয়োগ দেয়া হল। শিক্ষক মশায় সেদিন থেকে পরীক্ষার আগ পর্যন্ত দির্ঘ দেড়মাস একান্ত প্রচেষ্টা চালালেন কিছুটা উন্নতির আশায়। এমন প্রচেষ্টার পরেও তার উন্নতি হল কি অবনতি হল তা বোঝা গেলনা। তাই শিক্ষক মশায় বাধ্য হয়ে ছেনু মিয়ার আক্রোশ থেকে বাঁচতে প্রশ্ন ফাঁস করলেন। ছেনু মিয়া এলাকার সবচেয়ে ক্ষমতাবান নেতা। আবার স্কুল কমিটির সভাপতি। তিনি নিজের ছেলের জন্যেই একরকম জোর করে প্রতি পরীক্ষার আগে এক দিন দুই দিন করে ছুটি রাখলেন। এতে সেই শিক্ষকেরও সুবিধে হল। ---- --- --- গেদুর প্রথম পরীক্ষাই ছিল বাংলা। তাকে আগে থেকেই ‘আম পাতা জোড়া জোড়া’ কবিতাটি শিখিয়ে দেয়া হয়েছিল। তাকে এই ছড়াটি এতবার পড়ানো হয়েছিল যে তার উপর ভর করা বাচ্চা ভূতেরাও সেগুলো হুবুহু মুখস্ত করে ফেলেছিল। গেদুর কিছুটা উন্নতি হয়েছে ভেবে তারাও অতি উৎসাহ নিয়ে পরীক্ষার হলে আসল। সবার অলক্ষ্যে গেদুর পাশেই বসল। যথারীতি পরীক্ষা শুরু হল। অন্য সব ছেলেমেয়েরা প্রশ্ন পত্র পেয়ে লেখা শুরু করে দিল। কিন্তু গেদুর মনযোগ চলে গিয়েছিল অন্যদিকে। গেদু প্রশ্নপত্রে দিকে না খেয়াল করে তার পাশেই জানালা দিয়ে জাম গাছের মগ ডালে চেয়ে রইল। সেখানে যে একজোড়া বক বাসা বেধেছে তা তার খেয়ালই ছিলনা। সে রাগে গজরাতে লাগল। কেন যে এতদিন স্কুলে আসেনি? গেদুর এমন কান্ড দেখে পরীক্ষা হলের সবাই অবাক হল। গেদু রেগে মেগে এই গাছটির দিকে কেন তাকিয়ে আছে তা কেউ বুঝল না। কিন্তু বাচ্চা ভূতেরা ঠিকই বুঝল। অন্যান্যরা ততক্ষণে লেখা অর্ধেক শেষ করে ফেলেছে। তাই বাচ্চা ভুতদের আর তর সইলনা। গেদুর মাথায় চপেটাঘাত করেই বসল। আঘাত খেয়ে ছেনুর হুঁশ এল যে সে পরীক্ষা দিতে এসেছে। কিন্তু সে যে প্রশ্ন পড়তে পারেনা। তাই প্রশ্ন না দেখেই নিজের নাম ধাম না লিখেই ছড়ার শিরোনাম লিখতে লাগল। লিখতে যেয়ে আরও বিপদে পরল। কি নামের কবিতা যে সে মুখস্ত করেছিল তা একটুও মনে হচ্ছে না। তার কান্না পাচ্ছে। তার প্রাইভেট শিক্ষকের কথা মনে হচ্ছে বার বার। মনে মনে তাকে অভিসম্পাত করছে। কি জালেম লোক, একবার এসে দেখেও গেলেন না! পরীক্ষা শেষ হতে আর পনের মিনিট বাকি। গেদুর খাতা তখনো সাদা পাতাই রেয়ে গেছে। পাশে বসে বাচ্চা ভুতেরা হাস পাস করছে। গেদুও তাদের ভয়ে অস্থির। আবার জানি বাচ্চা ভূতদের পক্ষ থেকে কি সাজা তার জন্য অপেক্ষা করছে। নানা চিন্তা করতে করতে হঠাত করেই ছড়ার ছন্দটি তার মাথায় এল। দেড়ি না করেই সে লিখতে লাগল, “ জাম পাতা জোড়া জোড়া মারব বক, চড়ব ভেড়া। ওরে ছেনু সরে দাড়া...... পনের মিনিটের মাথাতেই দারুন এক ছড়ার সৃষ্টি হল। অতঃপর পরীক্ষার সমাপ্তি ঘন্টা বাজল। গেদু খাতা জমা দিবে ঠিক তখনই খেয়াল করল, তার উত্তর পত্র আর বেঞ্চের উপড়ে নেই। উত্তর পত্র কোথায় গেল তা আশেপাশের কেউই বলতে পারছেনা। তাই সকলেই তার উত্তর পত্র খুঁজতে ব্যস্ত হয়ে গেল। অবশেষে পরীক্ষার হলের বাইরে জাম গাছের তলায় এক ভেড়ার উপড়ে সেটি দেখা গেল। গেদু বাদে অন্য ছেলে মেয়েদের মাথায় এলনা কিভাবে সেটি বাইরে গেল? কিন্তু ক্লাশের শিক্ষক গেদুর বাচ্চা ভূতের ব্যপারটা জানতেন। তাই তিনি কাউকে বাইরে যেতে না দিয়ে একাই উত্তর পত্র আনতে গেলেন। শিক্ষক জাম গাছের তলায় যেতেই বাচ্চা ভূতেরা দৃশ্যমান হল। আজ আর ওঝার প্রয়োজন হলনা। ক্লাশের ভেতরের ছেলে মেয়েরা ভয়ে অস্থির। আর গেদুর যায় যায় অবস্থা। এদিকে শিক্ষক কাল বিলম্ব না করে বাচ্চা ভূতদের জিজ্ঞেস করে বসলেন, “কিরে আজ আবার পরীক্ষার উত্তর পত্রে কি দোষ করল?” বাচ্চা ভূতদের একজন রেগেমেগে বলল, “স্যার জানেন না, এই গেদু কী আকাম করছে! তারে গত দেড় মাস লাগাইয়া আম পাতা জোড়া জোড়া নামের ছড়াটা মুখস্ত কারানো হইতাছিল। ওর লগে থাকতে থাকতে আমাগোও ছড়া মুখস্ত হইয়্যা গেছে। আর সে পরীক্ষায় আইস্যা এই গাছের উপর বকের বাসার বক মারা যায় ক্যামনে সেই ফন্দী ফিকির করতাছিল। আর সে খাতায় কী লেখছে তা কইতে আমার লজ্জায় মাটিতে মিশ্যা যাইতে মন চাইতাছে”। একটু দম নিয়ে বাচ্চাভূত পাশের কেচু ভূতকে বলল, “এই কেচু, স্যারেরে শোনায় দে, গেদু কী লেখছে?” কেচু ভূত এবার দৃশ্যমান হল। সে বরাবরই একটু রাগী। উত্তরপত্রটাকে সে কামড়ে ধরে প্রচণ্ড আক্রোশে গেদুর দিকেই চেয়ে ছিল। গেদু ততক্ষণে অজ্ঞান। কেচু ভূত উত্তরপত্র পাশে রেখে ছড়া আবৃতি শুরু করল। প্রথমেই দুই হাতে দুই জোড়া জাম পাতা নিয়ে বলল, “জাম পাতা জোড়া জোড়া”। এক হাত উচিয়ে জাম গাছের মাথায় বকের বাসার দিকে দেখিয়ে বলল, “মারব বক চড়ব ভেড়া”। বাচ্চা ভূত এবার স্যারকে লক্ষ করে বলল, “এইবার কন, আমরা কি কোন ভূল করছি?” ততক্ষণে প্রায় একশত উৎসাহী দর্শক উপস্থিত হয়েছে। স্কুলের সেই বাচ্চা ছাত্র ছাত্রীরা বাচ্চা ভূতের উত্তরে এক বাক্যে বলল, “স্যার, বাচ্চা ভূত উচিত কাজই করেছে”।

Share:

পৃষ্ঠাসমূহ

Popular

Translate

মোট পৃষ্ঠাদর্শন

Like Us